প্রেম ভালোবাসার হরমনঃ টেষ্টোস্টেরন (একটা উৎসৃঙ্খল হরমন)
আমরা যখন মায়ের পেটেঃ
মুলারিয়ান ডাক্ট হতে পুরুষের যৌনাংগ তৈরি হবে নাকি মহিলাদের মত যৌনাংগ গঠীত হবে তা নির্ধারন করে। তবে এই টেষ্টোস্টেরন মায়ের, সন্তানের নয়। অর্থাৎ গর্ভাবস্থায় আপনার মায়ের টেষ্টোস্টেরন লেভেল আপনার যৌনাংগের সুগঠনের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত।
আমরা যখন সদ্যভুমিষ্টঃ
জন্মের প্রথম সপ্তাহে কোন এক অজানা কারনে একজন ছেলে শিশুর টেষ্টোস্টেরনের মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। এবং তা পরবর্তি ৪-৫ মাস পর্যন্ত যারি থাকে। ধারনা করা হয় এই সময় ছেলে বাচ্চাদের মস্তিষ্ককে পুরুষালি করাই টেষ্টোস্টেরনের এক মাত্র কাজ। ৬মাস বয়স থেকে বয়ঃ সন্ধি পর্যন্ত ছেলে বাচ্চাদের রক্তে টেষ্টোস্টেরন প্রায় পাওয়া যায়না বললেই চলে। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই মস্তিষ্ক পুরুষালি করনে মস্তিষ্কের উপর কিন্তু টেষ্টোস্টেরন কাজ করতে পারে না, কাজ করে ইস্ট্রোজেন!!! টেষ্টোস্টেরন এ্যরোম্যাটাইজড হয়ে ইস্ট্রজেনে পরিনত হয়, তারপর মস্তিষ্কের উপর কাজ করে।
আমরা যখন কিশোরঃ
কৈশরের যাবতিয় সকল দৈহিক ও মানষিক পরিবর্তিনের জন্য দায়ি এই হরমনটি। এই সব পরিবর্তনের বেশিরভাগই খুব মজার। এই নিয়ে নুতন কিছু না বল্লেও চলে। তবে ব্রোন অনেক সময়ই এই হরমনটির ব্যাল্যেন্সের উল্টাপাল্টার জন্য হয়ে থাকে। মোটের উপর আমাদের বালক থেকে পুরুষ হতে যা যা প্রয়োজন তার অনেকটাই এই হরমনের অবদান। যেমন আমাদের শুক্র কিট তৈরি করার ক্ষমতা বা আমাদের অধিক সমর্থবান শরির। বা যেমন মাংস পেশীর সুগঠন মেইল প্যাটার্ন ব্যাল্ডিং অর্থাৎ কিছুচুল পড়ে গিয়ে বালক থেকে পুরুষের মত চুলের আকৃতি পাওয়া।
কৈশর বা তারপরঃ পুরুষ ও স্ত্রী উভয়ের যৌন চাহিদা এই হরমনটির উপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ যার এই হরমন বেশী তার যৌন ক্ষমতা ও চাহিদা বেশী। কিন্তু দুক্ষেঃর ব্যাপার হল যে পুরুষদের তা বেশী থাকে তাদের স্ত্রী ভিন্ন অন্য নারীতে আকৃষ্ট হবার সম্ভাবনা প্রবল, আর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদের সম্ভাবনাও বেশী।
ভালোবাসা ও পিতৃত্তের সাথে এই হরমনের সম্পর্কঃ প্রেমে পড়লে পুরুষের টেষ্টোস্টেরন লেভেল কমে যায় আর নারীদের তা বেরে যায়। তবে এই ব্যাপারটা স্থায়ী কিছু না। দেখাযায় যে প্রথম ১-৩ বছর হানিমুন ফেজ এর পর এই পার্থক্য আর প্রতিয়মান হয় না। পিতৃত্তের প্রথমদিকেও পুরুষদের এই হরমনের মাত্রা কম থাকে। এটিও স্থায়ী নয়। এই সময় গুলোতে টেষ্টোস্টেরন এর মাত্রা কম থাকলে পারিবারিক সম্পর্ক গুল স্থায়ীত্তের দিকে মোড় নেয়। পুরুষের টেষ্টোস্টেরনের মাত্রা তার প্রেমিকার উপস্থিতির উপর নির্ভর করে না। অর্থাৎ প্রেমিকা দূরে থাকলেও তার এই হরমনের মাত্রা একই থাকে, কিন্তু এক জন স্ত্রীর টেষ্টোস্টেরনের মাত্রা তার প্রেমিকের উপস্থিতির উপর নির্ভর করে। অর্থাৎ প্রেমিক কাছে থাকলে তার টেষ্টোস্টেরনের মাত্রা বেশি থাকে।
যৌন মিলনঃ মিলনের শেষদিকে যখন পুরুষের বির্য নারীর যোণিতে নিক্ষেপিত হয় তখন এই বির্যের টেষ্টোস্টেরন আর এন্ডোরফিন নারীর শরীরে টেষ্টোস্টেরন, এন্ডোরফিন, আর অক্সিটোসিনের মাত্রা প্রচন্ড রকমের বাড়িয়েদেয়, এবং তা নারীর অর্গাজমে সাহাজ্য করে। এই বির্যের নানা উপাদান নারীর প্রজনন তন্ত্রের সুস্বাস্থও রক্ষা করে। রক্তে পুরুষের টেষ্টোস্টেরনের মাত্রা সাধারনত সকালবেলা বেশি থাকে।
পুরুষের যৌন উত্তেজনাঃ যৌন উত্তেজনা বেশী হয় যখন টেষ্টোস্টেরনের মাত্রা বেশী থাকে। আবার টেষ্টোস্টেরনের মাত্রা বেশি থাকে যারা যৌন মিলন কম করে!! রাতে যৌন মিলন করা এক জন পুরুষের সকাল বেলা টেষ্টস্টেরনের মাত্রা অনেক বেশি থাকবে। নারীদের সাথে সামান্য কথা বললেই পুরুষের এই হরমনের মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। আবার স্বামীর টেষ্টোস্টেরনের মাত্রা স্ত্রীর ঋতু চক্রের মাঝামাঝি সময় অনেক বেশী থাকে, কারন এই সময় স্ত্রীর ডিম্বাশয় থেকে ডিম নির্গত হয়।
নারীর যৌন উত্তেজনাঃ যৌন মিলনের আগের তুলনায় যৌন মিলনের পরে নারীর টেষ্টোস্টেরনের মাত্রাবেশি থাকে, আর তার চেয় বেশি থাকে যদি যৌন মিলনের পর স্বামী কিছুক্ষন স্ত্রীর আলিঙ্গনে থাকে। ইংরেজীতে একটা কথা আছে, “Men love, to have sex. Women have sex, to be loved.” কিন্তু স্বাভাবিক ভাবেই যে নারীর এই হরমনের মাত্রা বেশি তার যৌন উত্তেজনা সহজ।
চারিত্রিক ধরনঃ টেষ্টোস্টেরন অধিক এমন পুরুষরা স্বার্থপর হবে।
আমাদের ঘিলুঃ টেষ্টোস্টেরনের কারনেই পুরুষের ঘিলু স্ত্রীর চেয়ে বড়। আবার কৈশরে টেষ্টোস্টেরন পুরুষকে করে অমনযোগী, আর বার্ধক্যে এর অভাবে পুরুষের ভুলে যাবার রোগ হয়!!
অপরাধ প্রবনতাঃ টেষ্টোস্টেরন তৈরি হবার পর শরীরে যখন ব্যাবহার না হয় তখন তা ইস্ট্রাডায়োল নামক হরমনে রুপান্তরিত হয়, এই ইস্ট্রাডাওল পুরুষদেরকে করে আক্রমনাত্তক ও অপরাধ প্রবন। অর্থাৎ এই অপরাধ প্রবনাতা টেষ্টোস্টেরন নয় ইস্ট্রাডাওলের মাত্রার উপর নির্ভর করে। তার মানে যদি এমন হয় যে কোন পুরুষ টেষ্টোস্টেরন তৈরি করে ঠিকি কিন্তু তার শরির তা ঠিক মত ব্যাবহার না করে ইস্ট্রাডায়োলে পরিনত করে, তবে সেই পুরুষ পুরুষালি না হয়েও হবে অতি মাত্রায় অপরাধ প্রবন। এই বার বুঝলেনতো যৌন উত্তেজনা বোধ করা আর ধর্ষন করার পার্থক্য? আর বুঝলেনতো বেশীর ভাগ চোর,ডাকাত ছিনতাই কারি কেন দেখতে কাপুরুষোচিত? বা পৌরষত্ত্ব মানেই যে গায়ের শক্তিদেখানোর জন্য পুরুষরা অপরাধ করে তা কিন্তু নয়।
কিছু কারন যা আপনার টেষ্টোস্টেরন বাড়ায়ঃ
১) ওজন কমলে টেষ্টোস্টেরন বাড়ে। তাই ওজন কমান
২) ভিটামিন ডি এর উৎপাদন বাড়ায়। তাই রোদে যান পরিশ্রম করুন
৩) জিঙ্ক আর ম্যাগ্নেসিয়াম এর অভাবে এর পরিমান কমে তাই বেশী কাচা মরিচ খান
৪) বয়স বাড়লে টেষ্টস্টেরন রক্তে বের হয় কম, তাই বয়স বৃদ্ধি বন্দ করুন।
৫) গুমে তা বারে তাই ঠিক মত ঘুমান।
৬) যে খাবার রক্তের গ্লুকজের মাত্রা খুব তারারাতি বাড়ায় তা রক্তের টেষ্টোস্টেরন কমায়। তাই এমন কিছু খাবেন না যা রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা খুব তারাতারি বাড়ায়, যেমনঃ চিনি, মিষ্টি………।
৭) প্রয়োজনীয় পরিমান মাংসের চর্বি খেতে হবে। অতিরিক্ত হইলে কিন্তু আবার ওজন বাড়বে!!!
৮) পরিশ্রম করলে যখন আপনার মাংস পেশীতে ল্যাকটিক এসিড তৈরি হয় তখন টেষ্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়ে। এই জন্য প্রতিদিন এমন পরিমান পরিশ্রম করুন যাতে আপনার মাংস পেশীতে হাল্কা ব্যাথ্যা হয়!!!
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন