লিচুর পুষ্টি গুন ও উপকারিতা
লোভনীয় রসে টাসা এই ফল কার না পছন্দ? আমরাতো খাচ্ছি, তাই জেনে নেই এর উপকারীতা ও চিকিৎসায় ব্যবহার।
রাসায়নিক উপাদান :তাজা ফলের রসালো শাঁসে থাকে- অ্যামাইনো অ্যাসিড, ভিটামিন-সি, ফলিক এসিড ও এর কনজুগেটস, সায়ানিডিনস, এসিটাইল গ্লোকোসাইড, সুগার এবং অন্যান্য যৌগ। বীজে থাকে- স্যাপোনিন, লিউকোসায়ানিডিন এবং একটি হাইপোগ্লাইসেমিক যৌগ, আলফা-গ্লাইসিন।
পুষ্টি উপাদান : ফলে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘সি’। প্রতি ১০০ গ্রাম লিচুতে পাবেন শর্করা ১৩.৬ গ্রাম, ক্যালরি ৬৬ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১৬.৫৩ গ্রাম, খাদ্য আঁশ ১.৩ গ্রাম, ফোলেট ১৪ মাইক্রোগ্রাম, সোডিয়াম ১ গ্রাম, পটাসিয়াম ১৭১ মিলি গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৫ মিলিগ্রাম, লৌহ ০.৩১ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৩১ মিলিগ্রাম ও ভিটামিন ‘সি’ ৩১ মিলিগ্রাম।
উপকারীতা ও চিকিৎসা :
১। লিচুতে রয়েছে প্রচুর পরিমান ভিটামিন-সি, ইহা ক্যানসার এবং হ্নদরোগ এর সাথে যুদ্ব করে। লিচুর রসে রয়েছে অলিগোনল-আর(oligonol-R)যাহা কারডিওভাসকুলার ফাংশন কে উন্নত করে এবং রক্ত নালীর ভিতরের ওয়ালের চরবি কে কমিয়ে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে ও রক্ত জমাট বাঁধা কে প্রতিরোধ করে্। প্রায় ৫০% হাট অ্যাটাক ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সক্ষম। ইহাতে পটাসিয়াম ও কপার রয়েছে, পটাসিয়াম শরীরের ইলেকট্রোলাইট ব্যলেন্স করে এবং হ্নদকম্পন ও উচ্চ রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে। ষ্টোক এবং করনারী হ্নদরোগ প্রতিরোধ করে। ইহাতে রয়েছে আয়রন যাহা রক্ত তৈরীতে সাহায্য করে।
২। লিচুর রসে রয়েছে ফ্রাবোনয়েডস(flavonoids) যার রয়েছে ক্যানসার প্রতিরোধী ক্ষমতা। আরও রয়েছে ফ্রাবোনেস(flavones), কোয়ারসিটিন(quercitin) এবং কেইমপফেরল(kaempferol),ইহারা একত্রিত ভাবে ক্যানসার সেলের বৃদ্ধিতে বাঁধা দেয়। সুতরাং এটি একটি এন্টি-ক্যানসার ড্রাগ।
৩। লিচুর রসে রয়েছে ভিটাসমন-সি, ইহা প্রাকৃতিক ভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ঠান্ডা লাগা ও গলা ব্যথা সারিয়ে তুলে, তাই এই মৌসুমের ফ্লুর জন্য ভালো একটি মেডিসিন।
৪। লিচুর বীজ শুকিয়ে পাউডার করে চা বানিয়ে খেলে গ্লান্ড ফোলা ও এর ব্যথা সারে, এমনকি নিউরোলজিক পেইন ও কমে। চায়নারা অন্ডকোষের ব্যথায় এই চা ব্যবহার করে থাকে।
৫। গাছের বিভিন্ন অংশ ডায়রিয়া, ষ্টমাক-আলসার, গ্র্যাসটিক ব্যথা চিকিৎসায় ব্যবহিত হয়।
৬। যারা ব্রণ ও মূখের দাগনিয়ে যাহারা ভুগছেন, আপনারা প্রতিদিন যতটা পারেন লিচু খান, ইহা আপনার ত্বকের ব্রন ও দাগ সারাতে সাহায্য করবে এবং ত্বককে লাবণ্যময় করে তুলবে।
৭। ডায়বেটিকস নিয়ন্ত্রনে এবং রোগীদের অন্ধত্ব প্রতিরোধে ইহার রয়েছে বিশেষ ক্ষমতা, ইহতে রয়েছে, এলডোস-রিডাকটেনস ইনহেবিটর ড্রাগ যা ডায়বেটিকস রোগী দের চক্ষু ও নারভ ক্ষতি প্রতিরোধ করে। তাই ডায়বেটিকসের রোগীরাও লিচু অবশ্যই খাবেন।
এছাড়াও লিচুর বীজ পাউডার করে চা বানিয়ে খেলে ডায়বেটিকস নিয়ন্ত্রনে থাকবে।
৮। জীবজন্তুর কামড়ে পাতা বেটে প্রলেপ দিলে প্রতিষেদক হিসাবে কাজ করবে।
৯। গলার সংক্রমনে লিচুর মূল ও ফুল পানির সাথে জ্বাল করে গড় গড়া করলে সংক্রমন সেরে যাবে।
চীনারা লিচুকে ভালোবাসা ও রোমান্সের ফল হিসেবে মর্যাদা দেয়।তাদের বিশ্বাস, যারা লিচু মুখে পুরবে, তারাই এর প্রেমে পড়বে। অতি উৎসাহিত কেউ চেষ্টা করে দেখতে পারেন
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন